নতুন শিক্ষাক্রম অনুমোদন, আগামী বছর থেকে বাস্তবায়ন
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৮:২৫ পিএম, ৩০ মে ২০২২বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সমন্বয় রেখে বর্তমান কারিকুলাম আধুনিক করা হচ্ছে। প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত চলমান শিক্ষাক্রমের ভুলত্রুটি সংশোধন, আন্তর্জাতিক মান ও সময়ের চাহিদা বিবেচনা করে এ পরিবর্তন আনার উদ্যোগ দিয়েছে সরকার।
শিক্ষাকে আনন্দময় করে তোলা এবং শ্রেণিকক্ষেই পাঠদান সম্পন্ন করার ব্যবস্থা রেখে প্রধানমন্ত্রী এর খসড়া মৌখিকভাবে অনুমোদন দিলেও সোমবার (৩০ মে) এ নতুন কারিকুলাম চূড়ান্তভাবে অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটি (এনসিসিসি)। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত সভায় সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
সভা সূত্রে জানা গেছে, মাধ্যমিক পর্যায়ে ষষ্ঠ শ্রেণির সারাদেশে ৬১টি স্কুল, কারিগরি ও মাদরাসায় পাইলটিং শুরু করা হয়েছে। সেসব বিষয়ে বিদ্যালয়ে পাইলটিং ক্লাস ভালোভাবে চলছে বলে তুলে ধরা হয়। নতুন কারিকুলাম বিষয়ে কোনো পরিমার্জন বা পরিবর্তন প্রয়োজন আছে কিনা সে বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী জানতে চাইলে কয়েকটি শব্দগত পরিবর্তন ছাড়া আর কোনো প্রস্তাব আসেনি। সে কারণে নতুন কারিকুলামের খসড়া চূড়ান্তভাবে অনুমোদন দেয় জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা-২০২১ অনুমোদন সংক্রান্ত শিক্ষাক্রম বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটিও এনসিসিসির সদস্যরা।
এটি বাস্তবায়নের ফলে, মাধ্যমিক পর্যন্ত থাকছে না কোনো বিভাগ-বিভাজন। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির সবাইকে পড়তে হবে ১০টি বিষয়। দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির ওপরই অনুষ্ঠিত হবে এসএসসি পরীক্ষা। একাদশ শ্রেণিতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বিভাগ পছন্দ করতে হবে। একাদশ শ্রেণি শেষে পরীক্ষা এবং দ্বাদশ শ্রেণি শেষে পরীক্ষা নেওয়া হবে। এ দুই পরীক্ষার ফলাফলের সমন্বয়ে তৈরি হবে এইচএসসির ফল।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
এ ছাড়া প্রাথমিকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা থাকছে না। চতুর্থ থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়তে হবে আটটি বই। তবে সব শ্রেণিতেই শিখনকালীন মূল্যায়নেই বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। বর্তমান পদ্ধতিতে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষা থাকছে না। চলতি বছর মাধ্যমিকস্তরের ষষ্ঠ শ্রেণির পাইলটিং শুরু হয়েছে। আগস্টে প্রাথমিকের প্রথম শ্রেণির পাইলটিং শুরু করা হবে বলে জানা গেছে।
২০২৩ সালে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি এবং ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু করা হবে। ২০২৪ সালে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি এবং অষ্টম ও নবম শ্রেণি এ শিক্ষাক্রমের আওতায় আসবে। ২০২৫ সালে পঞ্চম ও দশম শ্রেণি যুক্ত হবে। ২০২৬ সালে একাদশ ও ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণি যুক্ত হবে। এ শিক্ষাক্রম অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
জানতে চাইলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সদস্য (কারিকুলাম) অধ্যাপক মশিউজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, নতুন কারিকুলামের খসড়া পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দিয়েছে। এখন এটি বাস্তবায়নে আর কোন বাঁধা নেই। আগামী বছর থেকে ধাপে ধাপে তা বাস্তবায়ন করা হবে। বর্তমানে মাধ্যমিকের পাইলটিং ক্লাস চলছে। সেসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। শিক্ষামন্ত্রী নিজেও কয়েকটি বিদ্যালয়ে গেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষকদের অনুরোধ করে সেসব বিদ্যালয়ে পাঠিয়েছিলেন। সবাই ইতিবাচক বলে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, নতুন কারিকুলামের ভাষাগত কয়েকটি বিষয় ছাড়া তেমন কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। সবাই সেটি অনুমোদন দেওয়ায় চূড়ান্ত করা হয়েছে। সে কারণে আজকের সভা আয়োজন করা হয় বলেও জানান তিনি।
সভায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মশিউর রহমান, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন ।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী খবরউইং করে শিক্ষা মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ মন্ত্রিসভার
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৬:৪৪ পিএম, ৩০ মে ২০২২জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমি (নায়েম) বা জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) অধীনে একটি উইং করে জাতীয় শিক্ষা মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ ‘জাতীয় শিক্ষা মূল্যায়ন কেন্দ্র আইন, ২০২২’ এর খসড়া উপস্থাপন করলে তা অনুমোদন না দিয়ে এ নির্দেশনা দেয় মন্ত্রিসভা।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘পরীক্ষা ব্যবস্থা মূল্যায়ন ব্যবস্থার মধ্যে একটা সমতা নিয়ে আসা, বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা পদ্ধতি আছে এরমধ্যে অ্যাসেসমেন্ট পদ্ধতিটা যাতে ট্রান্সপারেন্ট এবং সিমিলারিটি থাকে যাতে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা না হয়। এজন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ জাতীয় শিক্ষা মূল্যায়ন কেন্দ্র আইন নিয়ে এসেছে। একটা প্রতিষ্ঠান বা করপোরেশনের মতো করবেন, ডিজি টাইপের একজন লোক দিয়ে নতুন একটা কেন্দ্র করতে চাচ্ছেন। মন্ত্রিসভা বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনার পর এ বিষয়টা নিয়ে একটু দ্বিমত পোষণ করা হয়েছে। এটার জন্য আলাদা প্রতিষ্ঠান করার দরকার নেই।’
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, ‘নায়েম বা এনসিটিবি এই দুইটা যে আছে, এগুলোর আইন ও কার্যক্রম সুপারভিশন করেন। ২০০৯ সালে একাডেমিক কাউন্সিল আইন হয়েছে, সেখানেও এ জাতীয় কিছু ইন্ডিকেশন দেওয়া আছে। এ তিনটি প্রতিষ্ঠান দেখে... নতুন করে প্রতিষ্ঠান করার দরকার নেই। যদি ওইসব আইন ও বিধি মডিফিকেশন করে এ প্রতিষ্ঠানগুলোর অধীনে একটি উইং করে কাজকর্ম করা যেতে পারে। প্রয়োজনে একজন পরিচালকের অধীনে ১০/১২ সহায়ক কর্মকর্তা নিয়ে উইং করা যেতে পারে।’
‘বোর্ডের অধীনে করা হলে ১১টি বোর্ডে আবার ১১টি করতে হবে তাই কেন্দ্রীয়ভাবে করতে বলা হয়েছে।’ এসব পর্যবেক্ষণ দিয়ে খসড়া আইনটি মন্ত্রিসভা ফেরত পাঠিয়েছে। ওনারাও রাজি হয়েছেন বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
বিজ্ঞাপন